আওয়ামী লীগ রাজপথে নামলে বিএনপি পালানোর পথ পাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, খেলা হবে, ডিসেম্বরে খেলা হবে। পালাবার দল আওয়ামী লীগ না, পালাবার দল বিএনপি।
জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধু ও চার জাতীয় নেতার খুনি গোষ্ঠির পৃষ্ঠপোষক উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, জনগণ আর বিএনপির দুঃশাসনে ফিরবে না। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। অন্য কোন উপায়ে নির্বাচন হবার সুযোগ নেই, দেয়াও হবে না।
আচ সোমবার বিকালে টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ক্ষমতাসীন দলের সিনিয়র নেতারা এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত টাঙ্গাইল জেলায় সাত বছর পর এই সম্মেলকে ঘিরে ছিলো নেতাকর্মীদের ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা।
সবশেষ টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালে। সেবার ফজলুর রহমান খান ফারুক এবং জোয়াহেরুল ইসলামকে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এবারও সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক পদে তাদের বহাল রাখা হয়েছে।
এমন এক সময় এই সম্মেলন, যখন একদিকে বিএনপির আন্দোলন মোকাবেলা অন্যদিকে নির্বাচনের কৌশল চূড়ান্ত করার চ্যালেঞ্জ। তাই, আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তব্য ঘুরে ফিরে এসেছে বিএনপিকে মোকাবেলা করার পাশাপাশি আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি।
সম্মেলনের প্রধান অতিথির ভাষণে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আজ জনগণকে সরকার পতনের উস্কানি দিচ্ছে।
বিএনপি নেতারা ১৩ বছরে ১৩ মিনিট আন্দোলন করতে পারেনি। শেখ হাসিনার উদারতায় বেগম জিয়া আজ মুক্ত। আপনারা পারেননি বেগম জিয়ার জন্য একটা মিছিলও করতে।
তিনি বলেন, বিএনপি ১৩ বছরে পারেনি, এখন সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন করবে, বিজয় মিছিল করবে। খালেদা জিয়াকে নিয়ে ১০ ডিসেম্বর নাকি বিজয় মিছিল করবে। তারেক রহমানকে নাকি বিপ্লবের মাধ্যমে হঠাৎ ঢাকায় নিয়ে আসবে। এয়ারপোর্টে দাওয়াত দিচ্ছে।
তারেক রহমান মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল আর রাজনীতি করবে না। হারানো ক্ষমতা ফিরে পেতে তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন চলছে। আসলে কী, হারানো হাওয়া ভবন ফিরে পেতে আজকে আন্দোলন চলছে।
কার নেতৃত্বে বিএনপি আন্দোলন করবেন- এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা ডাক দিলে ঢাকায় লাখ লাখ লোক বের হবে, অলিগলি ভরে যাবে। তাই বলছি পালাবার দল আওয়ামী লীগ না, পালাবার দল বিএনপি। এবার কোথায় পালাবেন? এই দিন দিন না, আরও দিন আছে।
আমরা যদি রাজপথে অবস্থান নেই, ঢাকা শহরে বিএনপি পালাবার পথ পাবে? পালানোর দল আওয়ামী লীগ নয়। পালানোর দল হচ্ছে বিএনপি। খেলার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। বাঁশের লাঠিতে পতাকা বেঁধে রাস্তায় নামবেন, খবর আছে। জাতীয় পতাকা বাঁশের লাঠিতে লাগাবেন, এটা আমরা হতে দেব না, তিনি যোগ করেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করেছেন জিয়াউর রহমান। তাদের বিচার বন্ধ করতে আইন করেছিলেন তিনি। খুনিদের পুরস্কৃত করেছে, খুনিদের বিচার বন্ধ করতে চেয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে খেলা হবে। খুনিদের ক্ষমা করা যায় না। শেখ হাসিনা সরকার সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘব করছে। সেই সরকারের বিরুদ্ধে এরা সাধারণ জনগণকে উসকানি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, বরিশালে নাকি ঢল। কীর্তনখোলার তীরে ঢল। মির্জা ফখরুল রংপুরে এক বস্তা টাকা শেষ করে গেছে। টাকার বস্তার ওপর বসেছিল। সেই দুবাইয়ের টাকা উড়ে বরিশালে। মির্জা ফখরুল টাকার ওপর বসে আছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুকের সভাপতিত্বে ত্রি-বার্ষিকী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য শাহজাহান খান, আব্দুর রহমান, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।
বিশেষ বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, সদস্য সানজিদা খানম, ইকবাল হোসেন অপু এমপি, সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম ও মোহাম্মদ সাঈদ খোকনসহ টাঙ্গাইলে সব আসনের সংসদ সদস্য। সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলাম (ভিপি জোয়াহের) এমপি।